একটি মেয়ের আত্নকাহিনী
একটি মেয়ের আত্নকাহিনী......
.
.
.
একদিন বন্ধুর বোনের বিবাহ অনুষ্ঠানে
গিয়েছি। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ
করে, বন্ধু ইমরানকে একটু সান্তনা দিয়ে
বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাত
২.৩০ বাজে, এতো রােত গাড়ি
পাওয়া সম্ভব নয়। তাই গাড়ির জন্য
দাড়িয়ে না থেকে পায়ে হাটা শুরু
করলাম।
কিন্তুু কিছু দূর যাওয়ার পর একটি
মেয়েকে দেখতে পেলাম। আমার মনে
হলো মেয়েটা হয়তো আমার মত
গাড়িনা পেয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি
একটু একটু মেয়েটির দিকে এগিয়ে
গেলাম, মেয়েটিকে দেখে মনে হলো
খুব সাধারণ মেয়েটি। কিন্তুু কি যেন
অসাধারণ কিছু আছে মেয়েটির মধ্যে।
আমি মেয়েটির দিকে অপলক তাকিয়ে
রইলাম। সাদাকালো সালোয়ার
কামিজ, কপালে ছোট লাল টিপ,
হাতে নীল কাঁচের চুড়ি অসাধারণ
লাগছে মেয়েটিকে। আমি
মেয়েটিকে বললাম আপনি এতো
রােত এখানে কেন দাড়িয়ে আছেন।
মেয়েটি কিছু বললোনা। আমি বললাম
আপনি কই যাবেন, মেয়েটি বললো
আপনি যেখানে নিয়ে যাবেন। আমি
তার কথা শুনে তার দিকে অভাক হয়ে
থাকিয়ে রইলাম। মেয়েটি দেখি
মিটি -মিটি হাসছে। কি সুন্দর তার
হাসিটা। আমি এবার মেয়েটিকে
বললাম আপনার বাসা কই, মেয়েটি
বললো আমি জিইসি থাকি। হঠাৎ
মেয়েটি আমার হাত ধরে ফেলে।
আমি বললাম কি করছেন এটা আপনি
আমার হাত ছাড়েন, মেয়েটি বললো
যাবেন নাকি এক রাত দেড়হাজার
টাকা নিবো। আমার আর বুঝা বাকি
রইলোনা মেয়েটা কি বলতে চায়।
বুঝতে পারলাম মেয়েটি সাধারণ কোন
মেয়ে নয়।মেয়েটি অসামাজিক ও
অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত। আমি
তার কাছ থেকে আমার হাতটি
ছাড়িয়ে দিলাম এক ভোঁ দৌড়। বাসায়
এসে মেয়েটির কথা চিনতা করতে
লাগলাম। এতো সুন্দর মেয়ে কেন এই
কাজ করে। সারা রাত ঘুমাতে
পাড়িনি শুধু বারবার মেয়েটির
হাসিটার কথা মনে পড়ে। কি সুন্দর করে
আসতে পাড়ে মেয়েটি। কেন শুধু শুধু
মেয়েটির কথা ভাবি, মেয়েটিকে
কোন ভালোবেসে ফেললাম নাতো।
প্রথম দেখায় কোন মেয়ের প্রতি প্রেম,
ভালোবাসায় আমি বিশ্বাস করিনা।
কিন্তুু মেয়েটির প্রতি মনের মধ্যে এক
অন্য রকম অনুভূতি সৃষ্টি হলো। তা হলে
সত্যি সত্যি মেয়েটির প্রেমে পড়ে
গেলাম। আয় হায় মেয়েটির নাম ও
জিজ্ঞেস করিনি, কই থাকে এ ও
জানি না। জিইসি জায়গাটা অনেক
বড় কই খুঁজে পাবো মেয়েটিকে এখন।
মেয়েটির কথা চিন্তা করতে করতে
কখন যে ভোর হয়ে গেল একটু ও টের
পেলাম না। সকালে ফ্রেশ হয়ে একটু
নাস্তা করে, জিইসি এর উদ্দেশ্যে
রওনা হলাম। জিইসি জায়গাটা অনেক
বড় তাই যে সব জায়গায় এই অসামাজিক
ও অনৈতিক কাজ চলে ওই সব জায়গায়
মেয়েটিকে খুঁজতে লাগলাম। অনেক
দিন হয়ে গেলো তার পরে ও
মেয়েটিকে খুঁজে পায়নি। অনেক
খুঁজার পর হঠাৎ মেয়েটিকে পেলাম।
তার সাথে একটি রুমে বসে আছি এখন,
৫০০ টাকা দিয়েছি একটি লোককে
তার পর মেয়েটিকে আর আমাকে একটি
রুমে ডুকিয়ে দিয়ে লোকটি অন্য দিকে
চলে গেল। মেয়েটি খাটে বসে আছে,
আমি দরজা বনধ করে মেয়েটির পাশে
গিয়ে বসলাম। মেয়েটিকে বললাম
কেমন আছো তুমি, মেয়েটি বললো
আমি ভালো। আমি আবার বললাম
আপনি কি আমায় চিন্তে পেরেছেন,
মেয়েটি বললো না। আমি এবার বললাম
ওই রাতে দেখা হয়ে ছিলো আপনি
আমার হাত ধরলেন। আমি হাত ছাড়িয়ে
দিলাম দৌড় মনে পড়ে কিছু। মেয়েটি
একটু চিন্তা করে হাসতে হাসতে
বললো ও আপনি সেই ছেলেটি যে ভয়ে
দৌড় দিলো। হা আমি সেই ছেলে
চিন্তে পারলেন তা হলে আমি
মেয়েটিকে বললাম আমি আপনাকে
অনেক খুঁজেছি কিন্তুু পায়নি। আজ
পেলাম।
মেয়েটি বললো আপনি আমাই কেন
খুঁজতে ছিলেন, আমি বললাম আপনাকে
আমি ভালোবাসি তাই। মেয়েটি
মিটি মিটি হাসছে। আমি বললাম
আমি হাসির কোন কথা বলিনি।
মেয়েটি বললো আমি এখন যে পথে
আছি ওই পথে প্রেম, ভালোবাসার
কোন মুল্য নেই। আমি সাধারণ কোন
মেয়ে না একটা খারাপ মেয়ে। আমি
বললাম আপনি এ পথে আসলেন কেন,
মেয়েটি বললো আপনার জানার ধরকার
নাই, আপনি এখান থেকে চলে যান।
আমি আবার বললাম না আমার জানতে
হবে আপনি বলেন। মেয়েটি এ বার
বললো শুনুনু তা হলে।.।.........
আমার নাম
রোকসানা আক্তার। আমার বাড়ি
ময়মনসিংহ। আমার বাবা একজন কৃষক আর
মা অন্যের বাসায় কাজ করে। আমার
একটি ছোট ভাই ও আছে নাম রোহান।
অনেক দুষ্ট ও কিন্তুু অনেক সুন্দর করে কথা
বলে। চার জনের সংসার অনেক সুখে,
শান্তিতে কাটতে লাগলো। আমি ঔই
সময় ক্লাস নাইনে পড়ি। ভালো ছাএী
হওয়াতে স্কুলের সব স্যার, ম্যাডাম সব
আমায় অনেক দেখতে পারতো। অনেক
সুন্দর ভাবে দিন কাটতে লাগলো।
বাবার সাথে মেলায় ঘুরতে যাওয়া,
বান্ধুবিদের সাথে সন্ধ্যায় এক সাথে
নদীর পাড়ে গিয়ে কাঁনামাছি
খেলা অনেক ভালোই কাটতে
লাগলো দিন গুলো। কিন্তুু বলেনা সুখ
এর পর দুঃখ আসে, আমার ও তার বিপরীত
হয়নি। সুখ হয়তো আমার কপালে বেশি
দিন সয়নী। বাবার হার্টের সমস্যা
ছিলো একদিন হঠাৎ বাবা মারা যায়।
আমি ওই সময় স্কুলে ছিলাম, বাবার মৃত্যুর
সংবাদ পেয়ে স্কুল থেকে তড়িঘড়ি
করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়।
বাসায় এসে বাবার লাশটা দেখে
অনেক কান্নাকাটি করি। বাবা মারা
যাওয়ার কয়দিন পর থেকে আমাদের
পরিবারে নেমে আসে কষ্ট নামক
যন্ত্রনাটা। মার একআর পক্ষে
পরিবারের বরণ পোষন করা সম্ভব নয়।
রোহান ক্লাস টুথে পড়ে, রোহান আর
আমার পড়া লেখার খরচ চলানো মার
পক্ষে সম্ভব না। তাই আমি পড়া- লেখা
ছেড়ে দিই। তার পড়ে ও আমাদের
পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই আছে।
একবেলা খেতে পাড়লে অন্য বেলা
খেতে পাড়িনা। রোহান অনেক
কান্নাকাটি করে আমরা না হয় না
খেয়ে থাকতে পাড়ি। কিন্তুু রোহান
তা পাড়ে না। অনেক ছোট তো তাই।
রোহান এবং মায়ের এই অবস্তা দেখে
নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগে।
তাই চিন্তা করি আমি যে কোন একটা
কাজ করবো। আমি মাকে বললাম কাজ
করার কথা। মা প্রথমে মানা করলে ও
পড়ে আমার কথায় রাজি হয়। মা মায়ের
এক দূর সম্পর্কের ভাই কে বলে আমার জন্য
যে কোন একটি কাজ দেখতে। তার
কয়দিন পর ওই লোকটা মানে আমার
মামা আসে আমাদের বাসায়। মামা
মাকে বলে যে আমার জন্য একটা ভলো
কাজ পেয়েছে শহরে, গার্মেন্টস শ্রমিক
পদে। মা মামাকে না করে দেই, মা
বলে এতো দূরে এই ছোট মেয়েটিকে
কি করে যেতে দিই। আমি মাকে
বুৃিৃঝয়ে অনেক কষ্টে রাজি করাই। তার
পর মামার সাথে এই শহরে চলে আসি।
মামা আমায় একটি মহিলার ঘরে
নিয়ে আসে, আর বলে এটা তোর আন্টি।
এখানে কয় একদিন থাক তার পর
চাকুরীতে জাবি। আমি কল করে তোর
আন্টিকে বলে দিবো কোথায় থোকে
পাটাতে হবে।।।।.. মামা চলে গেল।
আন্টি আমাকে বললো নাম কি তোর
আমি বললাম রোকসানা। আন্টি
আমাকে কিছু ফল খেতে দিয়ে চলে
গেল। সকাল থেকে দুপুর হয়ে গেল,
আন্টি বললো ভাত খেতে আয় আমি
গেলাম। ভাত খেয়ে দুপুরে ঘুমিয়ে
পড়লাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি আন্টির
পাশে একটি লোক বসে আছে। আন্টি
আমাকে বললো রোকসানা এদিকে আয়,
আমি আন্টির কাছে গেলাম। আন্টি
আমায় বললো এই লোকটিকে নিয়ে ওই
রুম এ যা। আমি আন্টিকে বললাম কেন
আন্টি আমার গালে দিলো এক থাপ্পর।
আমি তার পর লোকটিকে নিয়ে যায়
রুমে। রুমে গিয়ে লোকটি আমার সাথে
যা করে তা আমি জীবনে ও কল্পপনা
করিনি। নর-পিশাচ টা আমার
দেহটাকে ছিড়ে-ছিড়ে খেয়েছে।
আমি চিৎকার করে কান্না করতে
করতে বললাম, আমায় ছেড়ে দিন আমি
বাসায় যাবো। নর-পিশাচ টা আমার
কোন কথা শুনলো না আমার দেহটাকে
ছিড়ে ছিড়ে খেলো। আমি অঘান হয়ে
গিয়েছিলাম। তার পর আমার কিছু মনে
নেই। যখন জ্ঞান ফিরে তখন নিজে
থেকে দাড়াবার ও শক্তি আমার
ছিলো না। ওই দিন রাতে আরো কয়জন
নর-পিশাচ আমার দেহটাকে ছিড়ে
ছিড়ে খেলো। আমি সকালে
আন্টিকে বলি আমার সাথে এমনটা
কেন করলেন তিনি। আন্টি বললো তোর
মামা তোকে চল্লিশহাজার টাকার
বিনিময়ে এখানে বিক্রি করে
গিয়েছে। আমি আন্টির কথা শুনে
বিশ্বাস ও করতে পারলাম না শুধু কিছু
টাকার বিনিময়ে মামা আমার সাথে
এমনটা করতে পারলো। আমি অনেক
চেষ্টা করেছি আন্টির বাসা থেকে
পালিয়ে জেতে কিন্তুু তার কিছু
বডিগার্ড এর জন্য পালাতে পাড়িনি।
রাতে যখন নর-পিশাচ গুলো আসতো তখন
আমি কিছু না কিছু একটা করে ওই নর-
পিশাচ গুলোকে তাড়িয়ে দিতাম।
আন্টি তাতে রাগ করে আমায় অনেক
নির্যাতন করতো। অনেক মারতো বেল্ট
দিয়ে, আর আগুনে হাত পুড়ে দিত।
আন্টির এই অত্যাচার দিন দিন বাড়তে
থাকে। এই অত্যাচারে আমি এক
পর্যায়ে ভেঙে পড়ি, তার পর এই
অসামাজিক কাজের সাথে আমি নিজ
থেকে জড়িয়ে পড়ি। এই কথা গুলো
বলতে বলতে রোকসানা কান্না
করেদিল। তার কথা গুলো শুনে আমার
চোখ দিয়ে ও পানি পড়ছিল। আমি
রোকসানা কে বললাম আমি তোমায়
এই নিকৃষ্ট জীবন থেকে বের করতে চায়।
রোকসানা বলে এটা কোনদিন সম্ভব
না, আর আন্টির এই বডিগার্ড গুলো
জানলে তোমায় মেরেই ফেলবে।
আমি বললাম যা হবে পরে দেখা
যাবে, তুমি আমার সাথে যাবে নাকি
বলো। রোকসানা হা যাবো। আমি
রোকসানাকে বললাম তা হলে এখন
আমি যায়। আর তোমার মোবাইল
নাম্বার টা দাও, যখন কল দিবো চলে
এসো। রোকসানা বললো হা আসবো।
দুইদিন একটু ব্যস্ত ছিলাম বাসার কাজে।
দুইদিন পর কল দিই, কল দেওয়ার একটু পর
রোকসানা কল ধরলো। হ্যালো
রোকসানা কই তুমি, রোকসানা হা
আমি ওই খানেই আছি। আচ্ছা শুনো তুমি
এখন আগ্রাবাদ চলে আসো,রোকসানা
বললো তুমি কই আমি বললাম আমি
আগ্রাবাদ মোড়েই দাড়িয়ে আছি।
রোকসানা বললো তুমি দাড়াও আমি
আসছি।রাত ১১টা বাজে একটু পর
রোকসানা আসলো, সোডিয়াম লাইট
এর আলোতে রোকসানাকে আনেক সুন্দর
লাগছে। রোকসানার পাশে গিয়ে ওর
হাতটা ধরে বললাম চলো এখন,
রোকসানা বললো কই যাবো। আমি
বললাম আসো দেখি কই যাইতে পাড়ি।
একটি রিকশা ডেকে আমি আর
রোকসানা রিকশাই উঠে বসলাম। আমি
রোকসানাকে বলি কেমন লাগে
তোমার এখন, রোকসানা বলে আমার
এখন অনেক ভয় করে।আমি বলি ভয় পেতে
হবে না তোমার আমি তো আছি।..
একটু পর আদিবার কল আসলো। কল ধরে
বললাম আদিবা আমরা একটু পর তোর
বাসার সামনে আসছি। তুই সব ঠিক করে
রাখ। আদিবা আমার কলেজ ফ্রেন্ড।
আদিবা একটি বাসাই একাই থাকে।
আদিবাকে আগে থেকে সব কিছু
জানিয়ে রেখেছি। মেয়েটা অনেক
ভালো,, সব সময় সবার সাহায্য
সহযোগীতা করে।।...
আমি আর রোকসানা আদিবার বাসার
সামনে চলে আসলাম। ওইজে
আদিবাকে দেখা যাচ্ছে,, রিকসা
থেকে নেমে পরলাম আমি আর
রোকসানা। রিকসা ভাড়া মিটিয়ে
দিয়ে আদিবাকে বললাম আদিবা তুই
রোকসানাকে নিয়ে তোর বাসাই যা।
রাত অনেক হয়েছে আমায় বাসাই
যায়তে হবে,, আম্মা ভাত নিয়ে
টেবিলে বসে আছে হয়তো আমার জন্য।
আসার সময় রোকসানাকে বললাম যে
তোমার কোন কিছু প্রয়োজন হলে
আদিবাকে বলিও, বা আমায় কল দিও।
রোকসানা বললো ঠিক আছে। আদিবা
রোকসানাকে বাসায় নিয়ে গেল।
আমিও আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা
দিলাম। বাসাই এসে দেখি আম্মা
ভাত নিয়ে টেবিলে বসে আছে। হাত
-মুখ ধুয়ে আম্মাকে বললাম ভাত দাও,,
আম্মা ভাত দিল। আম্মাকে বললাম তুমি
বসে ছিলা কেনো ভাত খেয়ে শুয়ে
যেতা।। আম্মা কিছু বললো না। খাওয়া
শেষে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
রুমে এসে রোকসানাকে কল দিলাম,
একটু পর কলটা ধরলো। হ্যালো রোকসানা
তুমি খেয়েছো,, রোকসানা বললো হা
খেয়েছি। তুমি খেয়েছো আমি বললাম
হা খেয়েছি। আমি রোকসানাকে
বললাম তুমি আদিবার ওইখানে পাঁচ
দিন থাকো তার পর আমি কিছু একটা
করতেছি। রোকসানা বললো তুমি
যেটা ভালো মনে করো। ওই দিকে ওর
আন্টি ও বডিগার্ড গুলো রোকসানাকে
পাগল এর মতো খুঁজতে লাগলো।.... পাঁচ
দিন পর রোকসানাকে নিয়ে আমার
বাসায় গেলাম। আম্মাকে সব খুলে
বললাম রোকসানার কথা। আম্মার
সাথে আগে থেকেই অনেক ফ্রি
ছিলাম তাই ওর কথা বলতে কোন সমস্যা
হলো না। আমি আম্মাকে বললাম আম্মা
আমি রোকসানাকে ভালোবাসি আর
ওকেই বিয়ে করতে চায়। আম্মা একটু চুপ
থাকার পর বললো দেখ বাবা আমি এই
মেয়েকে আমার ঘরের বউ বানাতে
পারবো না। আম্মা বললো আমি মেনে
নিলেও এই সমাজ তোদের কখনো মেনে
নিবে না। আম্মা এই কথা বলে চলে
গেল। আমি কি করবো কিছু বুঝতেছি
না। রোকসানাকে অনেক
ভালোবাসি তাকে ছাড়তে পারবো
না। অন্য দিকে মাকে অনেক শ্রদ্ধা
করি তাই মাকে কষ্ট দিতে পারবো
না। মা আমায় অনেক ভালোবাসে। শুধু
সমাজের ভয়ে মা রোকসানাকে
মেনে নিচ্ছে না। এই আমাদের কেমন
সমাজ, যে সমাজে একটি মেয়ে দিনের
পর দিন অত্যাচার সহ করে যাচ্ছে তা
নিয়ে সমাজের কারো মাথা বেথা
নাই। কিন্তুু মেয়েটার যেই একটু ভালো
করতে চায় সমাজের মাথা বেথা শুরু।
এই তুচ্ছ সমাজকে আমি ঘৃণা করি। এখন
রোকসানাকে নিয়ে কই যাবো কি
করবো। এই সমাজ তো রোকসানাকে
মেনে নিবে না। এইখানে রোকসানা
আরও বেশি কষ্ট পাবে। তাই অনেক
ভেবে -চিন্তে দেখলাম
রোকসানাকে এখানে রাখা যাবে
না।
তাই রোকসানাকে নিয়ে তার
গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ চলে
আসলাম। রোকসানা বললো আট বছরে
এখানে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে।
রোকসানার বাড়িতে গেলাম,
রোকসানার মা ও ভাই রোকসানাকে
দেখে অনেক কান্নাকাটি শুরু করে
দিলো। রোকসানা ও তাদের পেয়ে
অনেক কান্নাকাটি করছে।
রোকসানার মা বললো বাবা তোমার
ঋণ আমি কখনো শোধ করতে পারবো না।
আমার মেয়েকে ফিরিয়ে এনেছো
তাই। আমি বললাম না আন্টি আমি যা
করছি তা আমার কর্তব্য ছিলো।
এবার বাসাই যাওয়ার পালা।
রোকসানাকে রেখে চলে আসার সময়
রোকসানা আমায় জড়িয়ে ধরে
কান্নাকাটি করতে লাগলো।
রোকসানাকে রেখে আসার সময় অনেক
খারাপ লাগতে ছিল। তার পরে ও
রোকসানা এখানে তাকলে সুখে
থাকবে এই ভেবে নিজের মনকে
সান্তনা দিয়ে চলে আসলাম চট্রগ্রাম।
বাসাই আসার পর কোন কিছুতে মন বসে
না। শুধু রোকসানার কথা মনে পড়ে।
অনেক কান্না করি আম্মাকে জড়িয়ে
ধরে। আম্মা আমার কান্না দেখে
নিজেও কেঁদে দেয়। প্রতিদিন রাতে
রোকসানার সাথে ফোনে কথা হতো।
মেয়েটা কল করে অনেক কান্না
করতো। তার মধ্যে একটি বছর কেঁটে
গেল। রোকসানার সাথে তেমনটা আর
কথা হয়না। আমি জানি ও আমায় ভুলতে
পারবে না তাই ওর সাথে কথা বলা
কমিয়ে দিলাম। ওর সাথে তেমনটা
কথা বলতাম না। কল দিলে কল ধরতাম
না। আমি চাই রোকসানা নতুন জীবন শুরু
করওক এবং সুখে থাকুক, তাই তার থেকে
দূরে থাকার চেষ্টা করতাম। একদিন
বাসাই বসে গান শুনছি রোকসানার কল
আসলো। একটু পর কলটা ধরলাম।
রোকসানা বললো কেমন আছো, আমি
বললাম ভালো। তুমি কেমন আছো
রোকসানা কান্না শুরু করে দিল। আমি
বলি কি হয়েছে রোকসানা বলে
আমার বিয়ে ঠিক করেছে মা। ওর
বিয়ের কথা শুনে বুকের বাম পাশে
ব্যথা অনুভব করতে লাগলাম। নিজেকে
কোন রকম সান্তনা দিয়ে
রোকসানাকে বললাম তা তো অনেক
খুশির খবর। রোকসানা বললো তুমি খুশি
তো কান্না জড়িত কন্ঠে, আমি বললাম
হা আমি সত্যি অনেক খুশি। তার পর
রোকসানা রাগ করে কলটা কেঁটে
দিলো। আমার অনেক খারাপ লাগছে
এখন। মনে হচ্ছে নিজের জীবন থেকে
কিছু একটা হারিয়ে যাচ্ছে। চোখ
দিয়ে অবিরত অশ্রুজল গড়িয়ে পড়ছে।
নিজেকে সান্তনা দিয়ে বললাম
রোকসানা তো সুখে থাকবে।
রোকসানার সুখ মানে আমার সুখ।
....
কিছু ভালোবাসা কঠিন বাস্তবতার
কাছে হার মানে...
Comments
Post a Comment